লকডাউন ও বাস্তবতা
একটি দেশ লকডাউন করতে গেলে সবচেয়ে বড় ব্যাকাপ যেটি দরকার সেটি হলো আর্থিক ক্ষমতা। উৎপাদন নেই, রপ্তানি নেই, আমদানি নেই, নেই কোন কাজ, বেচা কেনা সব বন্ধ! ইকোনমিক সাইকেল কাজ করা বন্ধ করে দেয়৷ অনলাইন ট্রানজেকশান হতে পারে, কিন্তু সেটাও না হওয়ার মতই(উবার/পাঠাও ওয়ালাদের বিকাশে পেমেন্ট করব বললেই যে লুক দেয়!!)। কান্ট্রি লকডাউন করে দেয়ার মত ক্ষমতা আমাদের নেই।
বাস্তব সত্য হলো আমাদের দেশের মানুষ যতটা শিক্ষিত তার চেয়ে দ্বিগুণ পরিমান ঘাড় ত্যাড়া ও গোঁয়ার। এদেশের মানুষের ভিতর সহযোগী মনোভাবের তুলনায় ডুবন্ত মানুষের কাঁধে পা রেখে উপরে ওঠার তাগিদ খুব বেশি। ধর্ম, রাজনীতি, চাকরি, ব্যাবসা এমনকি ক্লাস ওয়ানে পড়া বাচ্চাটাকেও বাসা থেকে শিখিয়ে দেয়া হয় "পরীক্ষার হলে কাউকে দেখাবে না বা কাউকে টিফিন শেয়ার করবা না" সব ক্ষেত্রেই এ দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ নিজের স্বার্থ আগে দেখে। করোনার মতো এমন পরিস্থিতিতে এদেশের মানুষ আসলে কি করবে সেটা এদেশের মানুষ সঠিক ভাবে বুঝে উঠতেই পারছে না। রাস্তায় এখনো ফেরিওয়ালা দেখা যায়। ঝালমুড়ি, ফুচকা চটপটি সব কিছুই বিক্রি হচ্ছে ফুটপাতে। বাইতুল মোকাররমের পেছনে স্বস্তায় ভাতের হোটেল চলছে৷ লোকাল বাস চলছে, রিক্সা চলছে। এরা দিন মজুর। দিনে আনে দিনেই খায়। লকডাউনে আটকা পড়ে এরা করোনায় না মরলেও ভাত ও পানিতে মরবে৷ স্বল্প আয়ের লোকজন ভাত খেতে স্বল্প দামের হোটেলেই ঢোকে।
যেদেশের টাকা সুইস ব্যাংকে পরে থাকে, বা ক্যাসিনোর মাটির তলায় বস্তায় পঁচে, সে দেশ কিভাবে আর্থিক ব্যাকাপ সিকিউর করে লক ডাউন করবে? দিনমজুর পরিশ্রমি মানুষগুলোর একদিন কাজে বের না হলে দুপুর বা রাতে কি খাবে, বাচ্চা গুলোকে কি খাওয়াবে সে চিন্তা নিজের মাথায় তুলে নেয়া জাস্টিন ট্রুডোর মতো কোন রাজনৈতিক ব্যক্তি এদেশে নেই। এদেশের মানুষও জানে নেই৷ তাই করোনাকে তোয়াক্কা না করে পেটের দায়ে উপার্জনে নামতেই হয়। হতে বাধ্য।
ক্ষিধের যন্ত্রণা অনেক নিষ্ঠুর। তাদের কাছে করোনায় ধুঁকে মরার চাইতে ক্ষিধের যন্ত্রনায় কাতর হয়ে মরা অনেক কষ্টদায়ক!
যেন উভয় সংকটে এই দেশ!!!
আল্লাহ ছাড়া কোন ভরসা নেই।
Post a Comment
আপনার সু-চিন্তিত মতামত জানাবেন।